আমেরিকার দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ভয়াবহ দাবানল এখনও চলমান, যার ফলে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অগ্নিকাণ্ড হিসাবে এটি চিহ্নিত হচ্ছে। লস এঞ্জেলস শহরে এই আগুনের তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে সেখানকার হাজার হাজার মানুষ তাঁদের প্রিয় ঘর-বাড়ি, গাড়ি এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পদকে পুড়ে যেতে দেখছেন। আগুনের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ যে, হাজার হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে এবং তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৩,৫০০ কোটি ডলার থেকে ১৫,০০০ কোটি ডলারের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তবে অনেকের প্রাণ রক্ষা সম্ভব হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ১০০ শতাংশ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আগামী ৬ মাসের মধ্যে করা হবে।
এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতির কারণে বিমা কোম্পানিগুলির জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞ সংস্থা জেপি মর্গান জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষতির পরিমাণ এবং বিমাকৃত ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ৫০০০ কোটি এবং ২০০০ কোটি ডলারে পৌঁছে গেছে। বিশেষত, ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসিফিক প্যালিসেডস এবং মালিবু এলাকা বিমা কোম্পানির জন্য খুবই ব্যয়বহুল। ফলে, এই অগ্নিকাণ্ডের পর এই অঞ্চলের বিমা প্রিমিয়াম বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই দাবানলের কারণে ১২,০০০ বাড়ি ও বহু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিটি বাড়ির পুনর্নির্মাণের জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার খরচ হতে পারে। এই ধরনের আগুনের জন্য প্রতিবছরই এই এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এবং অনেক বিমা কোম্পানি এখানে ব্যবসা চালানো থেকে বিরত হয়ে গেছে। বাকি কিছু কোম্পানি তাদের প্রিমিয়াম বৃদ্ধি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই বিপুল অগ্নিকাণ্ডে ক্যালিফোর্নিয়া এখন যেন এক যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা, যেখানে বিপুল পরিমাণে ক্ষতি এবং মানুষের দুর্ভোগ চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুকনো আবহাওয়া, দাহ্য পদার্থ এবং বাতাসের বেগের কারণে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।