‘রাস্তার শিক্ষক’ দীপনারায়ণ নায়কের নাম এখন পৌঁছে গেছে বিশ্বের দরবারে। ইউনেসকো পরিচালিত ‘গ্লোবাল টিচার প্রাইজ’-র আওতায় বিশ্বের সেরা দশ শিক্ষকের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন তিনি। আসানসোলের জামুড়িয়া তিলকা মাঝি আদিবাসী ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক দীপনারায়ণ নায়ক। বিশ্বের সেরা শিক্ষককে পুরস্কারমূল্য হিসেবে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করা হয়। সমস্ত ভারতের মানুষের আসা বিশ্বের ১৩০টি দেশের প্রতিনিধিদের ছাপিয়ে বিশ্বের সেরা শিক্ষকের পুরস্কার পাবেন এই শিক্ষক।
দীপনারায়ণবাবু তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ লেখেন, ‘২০২৩ সালের ভার্কি ফাউন্ডেশন গ্লোবাল টিচার প্রাইজের ১০ জন ফাইনালিস্টের মধ্যে নির্বাচিত হওয়ায় আমি অত্যন্ত গর্বিত এবং ধন্য। যে পুরস্কারের সঙ্গে যুক্ত আছে ইউনেসকো এবং দুবাই কেয়ারস। এই অবিশ্বাস্য সম্মানের জন্য ভার্কি ফাউন্ডেশন, ইউনেস্কো এবং দুবাই কেয়ারসকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
২০২১ সালে করোনা মহামারীর সময় সমস্ত বিশ্ব যখন লকডাউনে ঘরবন্ধী তখন বিভিন্ন স্কুলে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছিল। কিন্তু দরিদ্র সীমার নীচে থাকা পড়ুয়াদের কাছে অনলাইনে ক্লাস করার মতো কোনো মাধ্যমে ছিল না তখন তাদের পাশে এসে দাঁড়ান দীপনারায়ণবাবু।
বাড়ির দেওয়াকে ব্ল্যাকবোর্ড বানিয়ে চলতে থাকে রাস্তার শিক্ষকের ক্লাস।রাস্তায় বসেই পড়ুয়াদের পড়াতে থাকেন দীপনারায়ণবাবু। বেঞ্চে নয়, রাস্তায় বসেই চলত পড়াশোনা। দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় পড়াশোনা চলত। সন্ধ্যা নামলে ভরসা ছিল মোমবাতির আলো। সেভাবেই ‘ক্লাস’ নিতেন দীপনারায়ণবাবু। সেইসঙ্গে পড়ুয়াদের বাড়ির সদস্যদেরও (মা,বাবা,ঠাকুমা, দিদাদের) ক্লাস নিতে থাকেন। খুদে পড়ুয়ারাও ‘শিক্ষক’ হয়ে ওঠে। নমিতা বাগচি বা বৈশাখী মারান্ডিরা হয়ে ওঠে মায়ের শিক্ষক৷ বৈশাখীর হাত ধরে মা বুধনি শিখে ফেলেন নাম-সই৷