রাত পোহালেই লক্ষ্মী পুজো। সৌভাগ্য এবং শান্তির প্রতীক হলেন দেবী লক্ষ্মী। দুর্গোৎসবের পরের পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। বাঙালির প্রতিটি ঘরে এই দিন কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো করা হয়। বেশিরভাগ বাঙালির ঘরে বছর ভর প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর পুজো করে থাকেন। শস্য সম্পদের দেবী বলে ভাদ্র সংক্রান্তি, পৌষ সংক্রান্তি ও চৈত্র সংক্রান্তিতে এবং আশ্বিন পূর্ণিমা ও দীপাবলীতে লক্ষ্মীর পুজো করা হয়।
তবে লক্ষ্মীর আবির্ভাব নিয়ে রয়েছে নানা মতভেদ। অনেকে বলেন লক্ষ্মীর সৃষ্টি হয়েছে সমুদ্রমন্থনের সময় সমুদ্রগর্ভ থেকে।
আবার অনেকের মতে দেবী লক্ষ্মীর জন্ম হয়েছিল দক্ষ রাজার পত্নীর সন্তান রূপে। আবার অনেক শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, দেবী লক্ষ্মী দেবসেনাপতি কার্তিকের পত্নী রূপে আবির্ভূতা হয়েছিলেন।আবার অনেক শাস্ত্রে বলা হয়েছে লাল পদ্ম থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন দেবীলক্ষ্মী। তবে আমরা যে লক্ষ্মীপুজোয় লক্ষ্মীর মূর্তিকে দেখি, তা কখনও একলক্ষ্মী রূপে দেখতে পাই। আবার অনেক জায়গায় অষ্টলক্ষ্মী রূপে অবস্থান করেন। প্রস্ফুটিত পদ্মফুলে বেলপাতা ও হাতির কপালে ও গোমাতার পৃষ্ঠে বা আঙুলের শীর্ষে দেবী লক্ষ্মী অধিষ্ঠান করেন।
অষ্টলক্ষ্মী কথার অর্থ হল সম্পদ। আর এই সম্পদের অর্থ হল সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য, জ্ঞান, শক্তি, ক্ষমতা ও সন্তানাদি। বিভিন্ন মন্দিরে ও গৃহে একযোগে এই পুজো করা হয়ে থাকে।
আদিলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মী: লক্ষ্মীদেবীর আদিরূপ হল এই মহালক্ষ্মী। ঋষি ভৃগুর কন্যারূপে লক্ষ্মীর অবতার হিসেবে মনে করা হয়।
ধনলক্ষ্মী: লক্ষ্মীর এই রূপের অর্থ হল স্বর্ণদাত্রী। এই লক্ষ্মীর দুপাশে থাকে হস্তী।
ধান্যালক্ষ্মী: এই লক্ষ্মী কৃষিসম্পদদাত্রী। ধান ও শস্যের দেবী হিসেবে পূজিত হন তিনি।
গজলক্ষ্মী: পুরাণ অনুযায়ী, দেবরাজ ইন্দ্রকে সমুদ্রগর্ভ থেকে তাঁর হারানো সম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। গজ শব্দের অর্থ হল হস্তী। গবাদি পশু ও হস্তীরূপে সম্পদদাত্রী হলেন এই দেবী।
সন্তানলক্ষ্মী: সন্তানের মঙ্গলকামনার জন্য এই দেবীকে পুজো করা হয়।
Read More জানুন কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর নিয়ম কানুন
বীরলক্ষ্মী: যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্ব ও জীবনের নানা সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে এই লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়।
বিজয়লক্ষ্মী: কঠিন পরিস্থিতি বা বাধাবিপত্তি থেকে জয় লাভ করে সাফল্য অর্জনের জন্য এই দেবীকে স্মরণ করা হয়।
বিদ্যালক্ষ্মী: বিদ্যা, কলা ও বিজ্ঞানের জ্ঞানপ্রদানকারিনী হিসেবে এই দেবীর পুজো করা হয়।