গত কয়েকদিনে ভারতে HMPV (Human Metapneumovirus) ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, যা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। এরই মধ্যে গুজরাটের আহমেদাবাদ শহরে এক অশীতিপর বৃদ্ধের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে, ওই রোগী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের মতে, এই ভাইরাসটি এক ধরনের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, এবং এর উপসর্গগুলি কোভিড-১৯-এর মতোই হতে পারে। তবে, এটি কোনও নতুন বা অজানা রোগ নয়, তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
HMPV ভাইরাসের উপসর্গ:
HMPV ভাইরাস সাধারণত শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য বেশি বিপজ্জনক হতে পারে, তবে এটি যে কোনও বয়সের মানুষকেই আক্রান্ত করতে পারে। HMPV উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জ্বর
- সর্দি-কাশি
- গলা ব্যথা
- শারীরিক দুর্বলতা
- কখনও কখনও নিউমোনিয়া, হাঁপানি, অথবা সিওপিডি
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
HMPV সংক্রমণ মূলত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় এবং রোগীর ব্যবহৃত জিনিসের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটতে পারে। অতএব, সংক্রমণ এড়াতে সঠিক সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, এবং হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা উচিত। যদি আপনি অসুস্থ থাকেন, তবে অন্যান্য মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার পূর্বে নিশ্চিত হন যে আপনার উপসর্গগুলি কমে গেছে।
বিশ্বে HMPV ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব:
এটি একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা সাধারণত শীত এবং বসন্তকালে বেশি দেখা যায়। চীন-এ সম্প্রতি এই ভাইরাসের কারণে হাসপাতালগুলোতে ভিড় বেড়েছে, এবং তার পরেই ভারতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষত, কর্নাটক, গুজরাট, এবং কলকাতা শহরে এটি বেশ কিছু মানুষের শরীরে পাওয়া গেছে।
HMPV ভাইরাসের প্রতিরোধ কীভাবে করবেন?
যেহেতু এই ভাইরাস হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়, তাই মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা জানান, কাপড়ের মাস্ক বা সার্জিক্যাল মাস্ক উভয়ই কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে, তবে, এন নাইনটি ফাইভ (N95) মাস্ক সবচেয়ে কার্যকর। এছাড়া, পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই ভাইরাসের সংক্রমণ কোথায় ছড়িয়েছে?
সম্প্রতি, বেঙ্গালুরু, নাগপুর, কলকাতা এবং গুজরাটে বেশ কিছু HMPV ভাইরাস কেস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে, বেঙ্গালুরুতে দু’টি শিশুর শরীরে এই ভাইরাস ধরা পড়ে, তবে এরা কোনো বিদেশ সফর করেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে এই ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
এখনই চিন্তার কোনও কারণ নেই, তবে HMPV ভাইরাস দ্রুত ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। সুতরাং, আপনার চারপাশে যে কোনও রোগী থাকলে তাদের কাছাকাছি না যাওয়ার চেষ্টা করুন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ মেনে চলুন।