শীতকালে বাঁধাকপি পাওয়া যায় বাজারে, তবে তার স্বাদ একেবারেই আলাদা। অনেকেই শীতের বাঁধাকপি একটানা বেশি পরিমাণে কিনে নিয়ে আসেন এবং তা সংরক্ষণ করতে চান। সাধারণত ফ্রিজে রাখা হলে বাঁধাকপি সপ্তাহখানেক ভালো থাকে, তবে আরও বেশি দিন টাটকা রাখতে হলে কিছু নিয়ম মেনে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
১) ফ্রিজে রাখা যেতে পারে:
বাজার থেকে বাঁধাকপি কিনে এনে ভালো করে ধুয়ে কেটে ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। তবে এটি দ্রুত খেয়ে ফেলা ভালো, বিশেষত ২-৩ দিনের মধ্যে, কারণ এতে পাতাগুলো শুকিয়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে বাঁধাকপি টাটকা রাখতে হলে কেটে কাচের বায়ুরোধী কৌটো বা চেন-টানা ‘জিপ’ পাউচে রেখে সংরক্ষণ করুন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে বাঁধাকপির গায়ে জল যেন না লেগে থাকে। জল থাকলে বাঁধাকপি দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
২) হিমায়িত করে রাখা যেতে পারে:
বাঁধাকপি দীর্ঘদিন ভাল রাখতে চাইলে হিমায়িত করা একটি চমৎকার পদ্ধতি। বাজারে পাওয়া যায় নানা ধরনের ফ্রোজেন সব্জি, তবে সেগুলি কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক ব্যবহার করে প্যাকেটজাত করা হয়। তাই বাড়িতেই বাঁধাকপি হিমায়িত করে রাখা সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর।
হিমায়িত করতে হলে প্রথমে বাঁধাকপি ভালো করে কেটে, ধুয়ে মিনিট তিনেকের জন্য ফুটন্ত জলে দিন। এরপর জল থেকে তুলে সঙ্গে সঙ্গে বরফ-জলের মধ্যে ডুবিয়ে দিন। মিনিট দুয়েক রাখার পর জল থেকে তুলে নিন এবং পুরোপুরি জলশূন্য হয়ে গেলে বায়ুরোধী ‘ফ্রিজার সেফ ব্যাগ’ বা ‘জিপ পাউচ’-এ ভরে দিন। তারপর হিমাঙ্কের নীচে (মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কম তাপমাত্রায়) রেখে দিন। এই পদ্ধতি মেনে রাখা হলে বাঁধাকপি প্রায় ৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
৩) ফার্মেন্টেড করে রাখা যেতে পারে:
ফার্মেন্টেড বাঁধাকপি একদম আলাদা স্বাদ এবং দীর্ঘস্থায়ী। ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়াতে বাঁধাকপি একেবারে টাটকা থাকে এবং স্বাদেও একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়। এটি তৈরি করতে, প্রথমে একটি বড় কাচের পাত্রে নুন, পছন্দমতো গুঁড়ো মশলা, জল এবং ভিনিগার দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। তারপর বাঁধাকপি কেটে সেই মিশ্রণে ভিজিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখতে হবে যে বাঁধাকপির পাতাগুলো যেন জলের উপরে ভাসমান না থাকে। এরপর কাচের পাত্রটি বন্ধ করে দিন, এমনভাবে যেন বাইরে থেকে কোনো হাওয়া প্রবেশ না করে। এই পদ্ধতিতে বাঁধাকপি বছরের পর বছর পর্যন্ত ভালো রাখা যায়।
সর্বশেষ কথা:
বাঁধাকপি সংরক্ষণের এই তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি শীতকালীন টাটকা বাঁধাকপির স্বাদ ও পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে পারবেন। যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তবে শীতকালীন এই সব্জিটি দীর্ঘ সময় ধরে খাওয়া যাবে এবং এর পুষ্টিগুণও থাকবে অটুট।