নতুন বছর শুরুতেই মহাকাশ গবেষণার অন্যতম বড় সাফল্য অর্জন করল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO। শূন্যের অভ্যন্তরে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে এমন একটি কাজ করা যা আগে কখনও সম্ভব হয়নি, তেমনই এক অসাধ্য সাধন করল ইসরো। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এবার মহাকাশে শস্য ফলানোর সফল পরীক্ষা চালিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ইসরো কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, এবার মহাকাশে সফলভাবে লোবিয়ার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে এবং সেটি শূন্যে প্রথম সবুজ পাতা গজিয়েছে।
মহাকাশে শস্য ফলানো: ইসরোর অসাধ্য সাধন
এটি একটি গবেষণা পরীক্ষা যেখানে লোবিয়ার বীজ (Cowpea) মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। বিশেষভাবে ডিজাইন করা ‘কমপ্যাক্ট রিসার্চ মডিউল ফর অরবিটাল প্ল্যান্ট স্টাডিজ’ (ক্রপস) মডিউলে এই বীজগুলি স্থাপন করা হয়। এই মডিউলটি PSLV-C60 POEM-4 মিশনের আওতায় মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। POEM-4 হল মহাকাশে ভারতের প্রথম রোবোটিক শাখা এবং এর মূল লক্ষ্য ছিল মহাকাশে উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং তাদের ব্যবহারিকতা সম্পর্কে নতুন তথ্য সংগ্রহ করা।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে মহাকাশে শস্য ফলানোর প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং সফলভাবে বীজগুলি অঙ্কুরিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই চারাগুলি এখন তার প্রথম সবুজ পাতা গজিয়েছে, যা একটি বড় সাফল্য হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এটি মহাকাশে উদ্ভিদ জীববিজ্ঞান এবং মহাকাশে খাদ্য উৎপাদনের জন্য ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ইসরোর নতুন মাইলফলক
ইসরোর এই সাফল্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এমন কিছু মিশন লঞ্চ করে ইসরো, যা সাধারণ জনগণের চোখের আড়ালে থাকে। PSLV-C60 POEM-4 এই ধরনের একটি মিশন, যেখানে ২৪টি পেলোড মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল শস্য উৎপাদনের পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ। এবং অবশেষে, ইসরো তার এই মহাকাশ মিশনে সাফল্য অর্জন করেছে।
এটি শুধু মহাকাশে শস্য ফলানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ নয়, বরং ভবিষ্যতে মহাকাশে খাদ্য উৎপাদন এবং কৃষির নতুন দিশা দেখানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মহাকাশে মানুষের বসবাস এবং দীর্ঘকালীন মিশনের জন্য খাদ্য উৎপাদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে এবং এই পরীক্ষার মাধ্যমে তার সম্ভাবনা আরও সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে।
ইসরো ও ভারতের ভবিষ্যত
মহাকাশে শস্য উৎপাদন শুধু একটি বিজ্ঞানের মাইলফলক নয়, এটি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যতের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই সাফল্য ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। এখন শুধু মহাকাশের বিভিন্ন অভিযানেই নয়, মহাকাশে কৃষি এবং খাদ্য উৎপাদনেও ভারত নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ইসরোর এই সাফল্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাকে বিশ্বমঞ্চে আরও গৌরবান্বিত করেছে।