বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) সোমবার তিনটি মামলা দায়ের করেছে, যার মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ঢাকার ডিপ্লোম্যাটিক জোনে জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। হাসিনার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি, তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকী রূপন্তী এবং ব্রিটিশ সরকারী কর্মকর্তা তুলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক রয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের ডিপ্লোম্যাটিক জোনে লাভজনক জমি বরাদ্দে প্রভাব খাটানো নিয়ে মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি, আজমিনা সিদ্দিকী রূপন্তী এবং তুলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক রয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, তারা যথেষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করেছে যে, হাসিনার পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রভাব খাটিয়ে জমি বরাদ্দ পেতে সহায়তা করেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক-জেনারেল আখতার হোসেন জানিয়েছেন, তুলিপ সিদ্দিকের ভূমিকা ছিল শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করা, যাতে ডিপ্লোম্যাটিক জোনে জমি বরাদ্দ পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেছেন, এই মামলার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এখন তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশে এক নতুন রাজনৈতিক সংকট?
এটি এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। শেখ হাসিনা তার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের পর ভারতে চলে গিয়েছিলেন। এরপর, বাংলাদেশে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস। এই সময়কালে হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি মামলা দায়ের হয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত অভিযোগও উঠে এসেছে।
এই দুর্নীতি মামলায় আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে, যেমন হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ, যা রাশিয়া-ফান্ডেড পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে হয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমালোচনা
এদিকে, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে এই নতুন দুর্নীতি মামলার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি বিদেশি সংবাদমাধ্যম এই বিষয়ে রিপোর্ট করেছে এবং এতে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশের জনগণের আস্থা ও সরকারের ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশের জনগণ এই ঘটনায় ভীষণ হতাশ। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একাধিক প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে, এবং এই নতুন কেলেঙ্কারি সরকারের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, যদি প্রমাণিত হয় যে শেখ হাসিনার পরিবার সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করেছে, তবে তা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে প্রভাবিত করবে? এছাড়াও, দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পর্কে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।