রতন টাটার স্বপ্নের গাড়ি টাটা ন্যানো তৈরি হবার কথা হয়েছিলো বাংলার সিঙ্গুরে। মূলত মধ্যবিত্ত পরিবারের হাতে স্বল্প মূল্যের এই গাড়ি তুলে দেওয়াই ছিল রতন টাটার মূল উদ্দেশ্য। গড়া স্বপ্নকে ছেড়ে ব্যবসা গুটিয়ে ফিরে গিয়েছিল টাটা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ পেয়েছিল গুজরাতের সানন্দে।
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হুগলির সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের কাজ। সমস্যার শুরু এখানেই। এমন অনেক চাষি ছিলেন যারা জমি দিতে রাজী ছিলেন না। সেই অনিচ্ছুক চাষীদের হাতিয়ার করে কারখানা বন্ধ করার জন্য আন্দোলনে নেমেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষমেষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়লাভ করেন এবং কারখানা তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে যেতে হয় টাটা গোষ্ঠীকে। সালটা ছিল ২০০৮।
হুগলির সিঙ্গুরে ১৫ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া টাটা ন্যানো কারখানার ক্ষেত্রে কপাল ফিরল টাটা গোষ্ঠীর। গতকাল ৩০ অক্টোবর সোমবার তিন সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত। সিঙ্গুরে যে কারখানা তৈরি করার জন্য টাটা গোষ্ঠী সমস্ত কাজ সেরে ফেলেছিল তার ক্ষয়ক্ষতি স্বরূপ টাটা গোষ্ঠীকে ৭৬৬ কোটি টাকা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
Read More Bande Bharat New Coach Update:আসতে চলেছে স্লিপার বন্দে ভারত, কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে
প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া কারখানা ছেড়ে চলে যাওয়াতে মোটা টাকা ক্ষতি হয় টাটা মোটরস-এর। এই নিয়ে টাটা মোটরস এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের আরবিট্রেশন চলছিল। সেখানেই টাটা গোষ্ঠী জয়লাভ করে। আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে ৭৬০ কোটি টাকা টাটা গোষ্ঠীকে দিতে হবে এবং তার সঙ্গে ৬ কোটি টাকা সুদ হিসাবে দিতে হবে।
সিঙ্গুরে কারখানা তৈরি করতে না পারার কারণে ৭৬০ কোটি টাকা ক্ষতি হয় টাটা গোষ্ঠীর এবং তার পাশাপাশি ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদ গুনতে হবে রাজ্য সরকারকে। আদালতের এমন রায়ের ফলে কপাল ফিরল টাটা গোষ্ঠীর। কিন্তু কপাল পুরলো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের। যদিও রাজ্য সরকার এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জও করতে পারে। তাই এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কোন পথে হাঁটে তাই দেখার বিষয়।