মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫-এর জন্য প্রস্তুতি চলছে পূর্ণ তালে, আর এর অংশ হিসেবে ২৫ লাখ ভক্ত সঙ্গমে পবিত্র স্নান করেছেন। এই এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ মহাকুম্ভ মেলা, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জমায়েত হিসেবে পরিচিত, ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এবং চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই বছরে ভক্তদের স্নান, পূজা এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য সঙ্গমে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কীভাবে শুরু হচ্ছে মহাকুম্ভ মেলা
মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫ এর আয়োজন শুরু হবে ১৩ জানুয়ারি, যা পৌষ পূর্ণিমা-এর দিন প্রথম রাজকীয় স্নান দ্বারা। এছাড়াও এই বছরের মেলা শেষ হবে মহাশিবরাত্রি ২৬ ফেব্রুয়ারি, যেখানে থাকছে মোট ছয়টি রাজকীয় স্নান।
উল্লেখযোগ্য তারিখগুলো:
- পৌষ পূর্ণিমা: ১৩ জানুয়ারি
- মকর সংক্রান্তি: ১৪ জানুয়ারি
- মৌনি অমাবস্যা: ২৯ জানুয়ারি
- বাসন্তী পঞ্চমী: ৩ ফেব্রুয়ারি
- মাঘী পূর্ণিমা: ১২ ফেব্রুয়ারি
- মহাশিবরাত্রি: ২৬ ফেব্রুয়ারি
এই দিনগুলোতে লাখ লাখ ভক্ত সঙ্গমে এসে পবিত্র স্নান করবেন, যা তাদের আধ্যাত্মিক শুদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে।
মহাকুম্ভের অদ্বিতীয় আকর্ষণ: নাগা সাধু
নাগা সাধুদের উপস্থিতি মহাকুম্ভ মেলা-কে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। তাদের একাধারে জীবনের সাদাসিধে যাপন, অভিজ্ঞান, ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি গভীর নিষ্ঠা মানুষদের মনকে টানে। নাগা সাধুরা তাদের অভিনব পোশাক এবং সন্ন্যাসী জীবনের জন্য বিশেষ পরিচিত।
২০১৯ সালের কুম্ভ মেলার স্মৃতি
২০১৯ সালের কুম্ভ মেলা-এ ২৫ কোটি মানুষের উপস্থিতি ছিল, আর এবারের মেলায় এই সংখ্যা ৪৫ কোটি অতিক্রম করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, মহাকুম্ভ মেলা শুধু ভারতীয়দের জন্য নয়, বিশ্বের সকল মানুষের জন্য এক মহামিলনমেলা।
সোশ্যাল মিডিয়া বিতর্ক: এক যুবকের গ্রেপ্তার
এদিকে, একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে মহাকুম্ভ মেলা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য ৩০ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই যুবক ফেসবুকে লিখেছিলেন যে, তিনি “মহাকুম্ভ মেলা আটকাতে” চান এবং এমন কিছু মন্তব্য করেন যা হিন্দু ধর্ম এবং রাম মন্দিরকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাসঙ্গিক পোস্টটি একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি ও হিন্দু সংগঠনের নজরে আসে, এরপর তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫-এর শুরু হওয়ার আগেই সঙ্গমে স্নান করতে আসা ২৫ লাখ ভক্ত এর মহিমা এবং তাৎপর্যকে আরও অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সারা বিশ্বের মানুষ এখানে এসে আধ্যাত্মিক শুদ্ধি লাভ করবেন, এবং এটি হয়ে উঠবে এক ঐতিহাসিক ধর্মীয় আয়োজন। এবারের মেলা ধর্মীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার এক অমূল্য উপহার।