ভারতের মহাকাশ খাতের উন্নয়নে ISRO ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতার একটি নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে। স্পেস ভিশন পরিকল্পনায় সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল, ভারতকে বিশ্বের মহাকাশ খাতে আরও বড় ভূমিকা পালনকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ISRO এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্ট-আপদের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্তমানে, ভারতের মহাকাশ অর্থনীতি বিশ্বের মোট মহাকাশ অর্থনীতির মাত্র ২% অবদান রাখছে, যা আগামী দশকের মধ্যে ১০%-এ পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) মডেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকার বেসরকারি খাতকে আরও বেশি করে দায়িত্ব দিতে চায় এবং নতুন স্টার্ট-আপদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে।
একটি উদাহরণ হিসেবে, ISRO আগামী বছরগুলোতে চাঁদে অভিযান এবং মানব মহাকাশ মিশন পরিচালনা করতে চায়। এই জন্য, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানদের সাহায্য নিয়ে মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ এবং স্পেস ভিশন বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া, R&D (গবেষণা এবং উন্নয়ন) কার্যক্রমে বেসরকারি খাত অংশগ্রহণ করবে, যাতে ভারতের মহাকাশ খাত আরও শক্তিশালী হয়।
ভারতের স্পেস ভিশন এর অংশ হিসেবে, ISRO এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানরা একসঙ্গে কাজ করবে। ISRO তাদের জানাশোনা, প্রযুক্তি, এবং গবেষণা সুবিধাগুলি বেসরকারি খাতকে প্রদান করবে, যাতে তারা বৃহত্তর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। বিশেষত, নতুন মহাকাশ যান নির্মাণ এবং কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কাজে প্রাইভেট কোম্পানির সহায়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ISRO এর প্রধান লক্ষ্য হল, বেসরকারি সেক্টরকে আরও স্বাবলম্বী করে তোলা, যাতে তারা মহাকাশ খাতের পুরো অপারেশনাল দায়িত্ব নিতে পারে। এর জন্য, ভারতীয় স্টার্ট-আপগুলির জন্য একটি ১,০০০ কোটি টাকা পরিমাণ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডও ঘোষণা করা হয়েছে। ISRO-এর বিভিন্ন ফ্যাসিলিটি এবং জ্ঞান এখন বেসরকারি কোম্পানিদের জন্য উন্মুক্ত, যাতে তারা নতুন ধারণা এবং প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পারে।
ISRO ইতিমধ্যে বৈশ্বিক মহাকাশ সংস্থাগুলির সাথে বিভিন্ন পার্টনারশিপ তৈরি করেছে, যার মধ্যে NASA, JAXA, Roscosmos, এবং CNES অন্যতম। এই সহযোগিতাগুলি ভারতকে নতুন প্রযুক্তি অর্জন এবং যৌথ মিশন পরিচালনা করতে সাহায্য করছে। এখন, ISRO নতুন এমার্জিং স্পেস নেশনদেরও ভারতের মহাকাশ খাতে যুক্ত করার চেষ্টা করছে।
এছাড়া, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারে ISRO প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং স্যাটেলাইট পরিচালনায় আরও দক্ষতা আনতে কাজ করছে। AI এখন চিত্র বিশ্লেষণ, অবজেক্ট শ্রেণীবিভাগ, এবং মিশন ডিজাইন-এ ব্যবহৃত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে স্যাটেলাইট অপারেশন আরও স্বয়ংক্রিয় করবে।
মহাকাশ খাতে বেসরকারি সেক্টর এবং স্টার্ট-আপদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর মাধ্যমে ISRO তাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য, যেমন চাঁদে অভিযান এবং মানব মহাকাশ মিশন, বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। একে স্পেস ভিশন হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে, যেখানে ISRO এবং বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করবে।
ISRO এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানদের এই সহযোগিতা ভারতের মহাকাশ খাতকে বিশ্বের শীর্ষ দেশের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠিত করে তুলবে।