মুর্শিদাবাদ: জেলার হরিহরপাড়া ব্লকের কাঞ্চননগর জুনিয়র বেসিক স্কুলে একটি অস্বস্তিকর দৃশ্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বসে মিড ডে মিল খাচ্ছে দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। মাথার ওপর ছাদ না থাকায় ছাত্ররা খোলা মাঠে বসে তাদের দুপুরের খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে একদিকে যেমন অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তেমনি প্রতিদিনই পাখিদের মল থেকে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য শিক্ষকরা পাখি তাড়াতে ব্যস্ত থাকেন। কারণ, মিড ডে মিল খাওয়ার সময় পাখিরা আকাশ থেকে এসে মল ত্যাগ করে দেয়।
দীর্ঘদিন ধরে চলা সমস্যা
অভিভাবকরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরে এই স্কুলে শিশুদের জন্য মিড ডে মিল খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট স্থান তৈরি হয়নি। স্কুলের অন্যান্য পরিকাঠামো ঠিক থাকলেও মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য সঠিক শেড বা ছাদ নেই। ফলে শিশুরা বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে বসে খাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খাবারের সময় পাখিদের মল শিশুদের উপর পড়ছে, যা এক ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
স্কুলের এক রাঁধুনী জানিয়েছেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের খোলা আকাশের নিচে খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ, স্কুলে মিড ডে মিলের জন্য কোনো ঘর বা শেড নেই। প্রতিদিন পাখির মল পড়ে যায়, যা শিশুদের জন্য খুবই অস্বাস্থ্যকর।”
শিক্ষকরা পাখি তাড়াতে ব্যস্ত
এদিকে, মিড ডে মিল খাওয়ার সময় শিক্ষকরা পাখিদের তাড়ানোর জন্য মাঠে দৌঁড়াচ্ছেন। তাঁদের একাংশ জানিয়েছেন, “ছাত্র-ছাত্রীরা খাবার খেতে বসলে আমরা পাখিদের তাড়াতে গিয়ে অনেক সময় ব্যস্ত হয়ে পড়ি। পাখির মল পড়লে তা সরানো কঠিন হয়ে ওঠে।”
অভিভাবকদের ক্ষোভ
বিগত কয়েক বছর ধরে এমন পরিস্থিতির মধ্যে সন্তানদের মিড ডে মিল খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন অভিভাবকরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এক অভিভাবক জানান, “এটা একটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি। আমাদের সন্তানরা এই খোলা আকাশের নিচে বসে খাবার খাচ্ছে, যা পুরোপুরি অস্বাস্থ্যকর।”
প্রশাসনের সহায়তা প্রয়োজন
স্কুলের শিক্ষকরা জানিয়েছে, ব্লক প্রশাসনকে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকরা একযোগে আশা করছেন যে, শীঘ্রই মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য একটি শেড বা ছাদ তৈরি করা হবে, যাতে শিশুরা নিরাপদ এবং সুস্থ পরিবেশে তাদের খাবার খেতে পারে।