দিনের বেলায় ওঁরা সাধারণত দিনমজুরের কাজ করতে অন্যত্র যান। কাজ করে বাড়ি ফিরতে সন্ধে গড়ায়। ততক্ষণে ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির বন্ধ। ফলে দুয়ারে সরকারের পরিষেবা ওদের কাছে অধরা ছিল। বঞ্চিত হচ্ছিলেন সরকারি বিভিন্ন পরিষেবা পেতে। এই সমস্যা সমাধানে এবার এগিয়ে এল মহকুমা প্রশাসন। রামপুরহাট শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আদিবাসীপাড়ায় বসল রাতে দুয়ারে সরকার শিবির। আদিবাসীপাড়ার খেটে-খাওয়া গরিব মানুষের সুবিধার জন্য শুক্রবার রাতে শিবিরের আয়োজন করেছিল প্রশাসন।
শিবির চলে সন্ধে ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। রাতের এই শিবিরে প্রচুর স্থানীয় আদিবাসী মানুষ হাজির হন। কেউ ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, কেউ ‘স্বাস্থ্যসাথী’, কেউ জন্ম শংসাপত্র, কেউবা উপজাতির শংসাপত্রের জন্য আবেদন জানান। তাঁদের আবেদনপত্র শিবিরের সরকারি কর্মীরাই পূরণ করে দেন। এই পরিষেবা পেয়ে খুব খুশি ৬০-ঊর্ধ্ব লক্ষ্মী মুর্মু, প্রৌঢ়া বাহা হেমব্রম থেকে শুরু করে যুবক সুনীল হাঁসদা, রাজেন টুডু, নবীন হেমব্রমরা। এই ব্যবস্থাপনার জন্য তাঁরা মহকুমা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। বাহা হেমব্রম বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতাদিকে আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।’
READ MORE ১ জানুয়ারি থেকে তৃণমূলের ‘বিজেপি হঠাও’ অভিযান
শুক্রবার রাতের এই শিবির পরিদর্শন করেন রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে, পুরপ্রধান সৌমেন ভকত ও প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। জিম্মি জানান, এই শিবিরে এলাকার শতাধিক আদিবাসী মানুষ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। ২০০০ সালের বন্যায় এই এলাকা প্লাবিত হওয়ার সময় অনেক আদিবাসী পরিবারের দলিলপত্র, উপজাতির সার্টিফিকেট ইত্যাদি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই অনেকেই তাঁদের উপজাতির সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন জানান। মহকুমা শাসক তাড়াতাড়ি তাঁদের উপজাতির সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।’ রামপুরহাটের পুরপ্রধান বলেন, ‘এই সব গরিব খেটে-খাওয়া মানুষের সুবিধার জন্য দুয়ারে সরকারের এ ধরনের নৈশকালীন শিবিরের আয়োজন অভূতপূর্ব।’