দুধকে সাধারণত ‘সুষম খাবার’ বলে মনে করা হয়, কারণ এতে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ভিটামিনসহ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান থাকে। তবে সময়ের সঙ্গে বদলেছে খাবারের ধরণ, আর এখন উদ্ভিজ্জ দুধের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কঠোর ডায়েট অনুসরণকারী বা ভেগানরা অনেক সময় গরুর দুধের বদলে কাঠবাদামের দুধ, সয়া মিল্ক অথবা ওট্সের দুধ বেছে নেন। কিন্তু, প্রশ্ন হল, এই ওট্সের দুধ কি সবার জন্য উপযোগী?
ওট্সের দুধের পুষ্টিগুণ
এক কাপ (২৪০ মিলি) ওট্সের দুধে প্রায় ১২০ ক্যালোরি থাকে, সঙ্গে থাকে ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম ফ্যাট, ৪ গ্রাম প্রোটিন এবং ২ গ্রাম ফাইবার। তবে, গরুর দুধে যেভাবে প্রোটিন ও অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, তেমনটা ওট্সের দুধে নেই। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানান, “ওট্সের দুধে প্রোটিন দ্বিতীয় শ্রেণির। তবে এতে ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা শরীরের জন্য উপকারী।” এই দুধ সহজপাচ্য, কম ফ্যাটের, ফলে যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটি আদর্শ। এছাড়া, প্রাণিজ দুধে থাকা ল্যাকটোজ় (শর্করা) থেকে বিরক্তি থাকলে, উদ্ভিজ্জ দুধ উপযুক্ত বিকল্প হতে পারে। তবে শিশুদের জন্য এটি উপযোগী নয়।
ওট্সের দুধের উপকারিতা
১) কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য
ওট্সের দুধে বিটা-গ্লুকান নামে একটি ফাইবার রয়েছে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত, ওট্সের দুধ নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরল ৬% অবধি কমে যেতে পারে। তাই যারা কোলেস্টেরলের সমস্যা বা হার্টের রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য এটি ভালো বিকল্প।
২) ওজন কমানোর জন্য উপকারী
ওট্সের দুধে ফাইবারের পরিমাণ বেশি, যা হজমে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে। এই কারণে যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্যও এটি উপকারী হতে পারে।
৩) হাড়ের স্বাস্থ্য
ওট্সের দুধে ভিটামিন ডি প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমায়, বিশেষ করে ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী হতে পারে।
কারা খাবেন না?
১) হজমের সমস্যা
যারা পেটের গোলমাল বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সে ভুগছেন, তাদের জন্য ওট্সের দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
২) শিশুদের জন্য নয়
ওট্সের দুধে প্রোটিন এবং ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে, তাই এটি শিশুদের জন্য আদর্শ খাবার নয়। ছোটদের জন্য গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে এটি পুষ্টির ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
৩) ব্র্যান্ডের পর্যালোচনা করুন
কিছু ব্র্যান্ডের ওট্সের দুধে অতিরিক্ত ক্রিম, চিনি বা কৃত্রিম রং মেশানো থাকে। এমন দুধ খেলে শরীরে সমস্যা হতে পারে, তাই কিনতে আগে ব্র্যান্ডের উপাদানগুলো দেখে নিন।